মাতাল হাওয়া (১৯৬৯ সালে দেখা লেখকের অভিজ্ঞতাসহ)
লেখক: হুমায়ূন আহমেদ
বিষয়: উপন্যাস, কথাসাহিত্য, বাংলাদেশের বই
হাবীব বললেন, আমাদের এই বাড়ি একটা প্রাচীন বাড়ি। প্রাচীন বাড়ির প্রাচীন নিয়মকানুন। অনাত্মীয় পুরুষমানুষের অন্দরমহলে প্রবেশ নিষেধ। নাদিয়ার শরীরের এখনো এমন অবস্থা না যে সে বাইরে এসে আপনার সঙ্গে দেখা করবে। আপনার স্কলারশিপের কী যেন সমস্যার কথা নাদিয়া বলেছিল। কাগজপত্রগুলি যদি রেখে যান, তাহলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে পারি। বিদ্যুত কান্তি দে বললেন, স্কলারশিপের সমস্যা সমাধানের চেয়ে নাদিয়ার সঙ্গে দেখা করা এখন আমার অনেক জরুরি।হাবীবের চোখের দৃষ্টি তীক্ষ্ম হলো। তিনি তাঁর সামনে বসা যুবকের দিকে তাকিয়ে রইলেন। যুবকের কথাবার্তার মধ্যে উদ্ধত ভঙ্গি আছে। তবে অত্যান্ত আত্মবিশ্বাসী ছেলে। আত্মবিশ্বাস চোখের তারায় ঝলমল করছে। হিন্দুদের চোখেমুখে একধরনের কাঁচুমাচু নিরামিষ ভাব থাকে, এর মধ্যে তা নেই। হাবীব বললেন, আমার মেয়ের সঙ্গে দেখা হওয়া অত্যন্ত জরুরি কেন ?
বইয়ের বিবরণ
- শিরোনাম মাতাল হাওয়া (১৯৬৯ সালে দেখা লেখকের অভিজ্ঞতাসহ)
- লেখক হুমায়ূন আহমেদ
- প্রকাশক অন্বেষা প্রকাশন
- আইএসবিএন 9789845021111
- প্রকাশের সাল N/A
- মুদ্রণ 7th Printed, 2013
- বাঁধাই Hardcover
- পৃষ্ঠা সংখ্যা 232
- দেশ বাংলাদেশ
- ভাষা বাংলা
আলোর উৎস কিংবা ডিভাইসের কারণে বইয়ের প্রকৃত রং কিংবা পরিধি ভিন্ন হতে পারে।
হুমায়ূন আহমেদ
বাংলা সাহিত্যের এক কিংবদন্তী হুমায়ূন আহমেদ। বিংশ শতাব্দীর বাঙালি লেখকদের মধ্যে তিনি অন্যতম স্থান দখল করে আছেন। একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার ও নাট্যকার এ মানুষটিকে বলা হয় বাংলা সায়েন্স ফিকশনের পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও তিনি বেশ সমাদৃত। বাদ যায়নি গীতিকার কিংবা চিত্রশিল্পীর পরিচয়ও। সৃজনশীলতার প্রতিটি শাখায় তাঁর সমান বিচরণ ছিল। অর্জন করেছেন সর্বোচ্চ সফলতা এবং তুমুল জনপ্রিয়তা। স্বাধীনতা পরবর্তী বাঙালি জাতিকে হুমায়ুন আহমেদ উপহার দিয়েছেন তাঁর অসামান্য বই, নাটক এবং চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রের বদৌলতে মানুষকে করেছেন হলমুখী, তৈরি করে গেছেন বিশাল পাঠকশ্রেণীও। তাঁর নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমনি’ দেখতে দর্শকের ঢল নামে। এছাড়া শ্যামল ছায়া, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, ঘেটুপুত্র কমলা প্রভৃতি চলচ্চিত্র সুধীজনের প্রশংসা পেয়েছে। অনন্য কীর্তি হিসেবে আছে তাঁর নাটকগুলো। এইসব দিনরাত্র, বহুব্রীহি, আজ রবিবার, কোথাও কেউ নেই, অয়োময়ো আজও নিন্দিত দর্শকমনে। হিমু, মিসির আলি, শুভ্রর মতো চরিত্রের জনক তিনি। রচনা করেছেন নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, জোছনা ও জননীর গল্পের মতো সব মাস্টারপিস। শিশুতোষ গ্রন্থ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক রচনা, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী মিলিয়ে হুমায়ূন আহমেদ এর বই সমূহ এর পাঠক সারাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে। হুমায়ূন আহমেদ এর বই সমগ্র পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিতও হয়েছে। সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জন করেছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), একুশে পদক (১৯৯৪), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), মাইকেল মধুসূধন দত্ত পুরস্কার (১৯৮৭), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮), শিশু একাডেমি পুরস্কার, জয়নুল আবেদীন স্বর্ণপদকসহ নানা সম্মাননা। হুমায়ূন আহমেদ এর বই, চলচ্চিত্র এবং অন্যান্য রচনা দেশের বাইরেও মূল্যায়িত হয়েছে৷ ১৯৪৮ সালের ১৩ই নভেম্বর, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় কুতুবপুরে পীরবংশে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের বেলভ্যু হাসপাতালে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। গাজীপুরে তাঁর প্রিয় নুহাশ-পল্লীতে তাঁকে সমাহিত করা হয়।